সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান প্রসঙ্গ



মামুন আহমেদ:

আজ সুনামগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে। প্রথম ধাপে সি ইউনিটে ২২৩ মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ১৯৫ জন শিক্ষার্থী। তিন ধাপে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিবেন ৪ হাজার শিক্ষার্থী। ইতোমধ্যে প্রথম ব্যাচে ৩ বিবাগে প্রায় দের শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। নতুন আরেক ব্যাচ যুক্ত হবে। বলা যায় ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয় স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। যা হাওরবাসীর জন্য অসাধারণ একটি উন্নয়ন। 


সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাস্পাস নির্মাণের স্থান নিয়ে  সরব আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে পক্ষ বিপক্ষে আওয়াজ উঠছে। বলাযায়, বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আন্দোলন চলছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প নিয়ে কিছু  অবজারভেশন শেয়ার করছি।

প্রথম জানতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প বর্তমানে বিশ্বিবদ্যালয় প্রকল্পের ৯৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন। এখন কেবল বাস্তবায়নের পালা। অর্থাৎ অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাকি।

একটি প্রকল্প হুট করে হয় না। এটি সংসদে আইন করে করতে হয়। একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পৃথক আইন রয়েছে। যা লিপিবদ্ধ করা হয়। কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে। কোথায় কোন ক্ষমতা প্রয়োগ হবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হবে তা লিখা রয়েছে এই আইনে।


সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন হয়েছে গত সরকারের আমলে। প্রকল্প প্রস্তুত করতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি টাকা। ক্যাম্পাসের স্থান নির্ধারণ, মাটি পরীক্ষা(৫০ টি স্থানে মাটি পরীক্ষা হয়েছে) কোথায় কতটি ভবন হবে, কোথায় রাস্তা হবে, পুকুর কোথায় থাকবে? ড্রেনেজ ব্যবস্থা কি হবে? ট্রাফিক ব্যবস্থা, সব ডিজাইন সম্পন্ন হয়েছে। এনিয়ে গবেষণা করে অনেকগুলো প্লানিং বই প্রস্তুত করা হয়েছে। এর জন্য সময় ব্যয় হয়েছে দুই বছর।


স্থান পরিবর্তন করতে হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। ফের ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রয়োজন। স্থান পরিবর্তন হলে বরাদ্দ প্রয়োজন ও ৩ বছর সময়  অতিবাহিত হবে।  যা বর্তমান সরকারের আমলে সম্ভব না ও হতে পারে।


আশঙ্কা হচ্ছে, আমাদের এই মতানৈক্যের কারনে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পটি ভেস্তে যেতে পারে। কেননা নির্ভরযোগ্য সূত্র হচ্ছে, সরকার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অসম্পূর্ণ এসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলের সাথে যুক্ত করে দিতে পারেন। আমরা যদি এভাবে টানা হেছড়া করি তাহলে আমাদের প্রতিষ্ঠান হাত ছাড়া হতে পারে। আর প্রকল্প বাতিল করতে সরকারের উপলক্ষ সৃষ্টি হতে পারে। যা আমাদের জন্য সুখকর নয়।

 

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে না কথা উঠতেছে। বাস্তবতা হচ্ছে বর্তমান ভিসি নিয়োগ হয়েছে জুলাই বিপ্লবের অনেক পর ডিসেম্বর মাসে। তিনি নতুন কোনো নিয়োগ কার্যক্রম করেননি। তিনি কোনো প্রকল্প প্রস্তুত করেননি? এক্ষেত্রের দুর্নীতির প্রশ্ন হয় কি করে৷ মন্ত্রীর বাড়িতে অস্থায়ি ছাত্রীনিবাসর বিনা ভাড়ায় থাকছেন ছাত্রীরা। তাহলে যেখানে ছাত্রীনিবাস ভাড়া হয়নি সেখা দুর্নীতি হয় কি করে?

শেষ কথা, বিশ্ববিদ্যালয় যেখানেই হোক, নাম কিন্তু সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে। বাংলাদেশের  প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়- ই ক্যাস্পাস শহরের বাহিরে রয়েছে।  তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নিয়ে বিতর্ক না করে নতুন নতুন প্রকল্প শহরের আশেপাশে গড়ে তুলতে আওয়াজ তুলি। মতানৈক্য নয় উন্নয়নের প্রশ্নে আমার এক ও অভিন্ন।